শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮

আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এই পরিচয় দিলে যদি আমাকে আবু বকরের মা বলে - আমার ছেলেকে তোমরা কেন খুন করলে ? আমার ছেলের অপরাধ কি ছিল ?
আমি কি জবাব দিব ?
আমাকে যদি এহসানের মা বলে আমার ছেলেকে কেন তোমরা এভাবে পিঠালে ? আমার ছেলের চোখ কেন নষ্ট করলে ?
আমি কি জবাব দিব ?
বিশ্বজিৎ এর মা, ধর্ষিতার মা, আরো অনান্য মায়ের প্রশ্নের কি উত্তর দিব ? নাকি আমাকে সারা জীবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় গোপন করে বাঁচতে হবে ?

বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

২১ ফেব্রুয়ারি কি?

২১ ফেব্রুয়ারি কি?

ফরহাদ উদ্দিন মাসুম 
২১.০২.২০১৮

গতকাল ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমার সন্তান আমাকে জিজ্ঞেস করলো বাবা ২১ শে ফেব্রুয়ারি কি?
আমি বললাম ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মার্তভাষা দিবস। বায়ান্নর এই দিনে আমরা আমাদের মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলাম। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার আরো নাম না জানা অনেকে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিল ভাষার জন্য।
বাবা আজ কি বঙ্গবন্ধু এবারের সংগ্রাম স্বাধীণতার সংগ্রাম বলেছিলেন?
না বাবা। বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ ভাষণ দিয়েছিলেন। সেটাতো ১৯৭১ সালে। আর ২১ শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে। আমরা সেদিন রক্ত দিয়েছিলাম।
বাবা তাহলে আজকে ৭ই মার্চের ভাষন কেন বাজছে?
আজকে কি আমাদের মা বোনরা সম্ভ্রম হারিয়েছিল?
না বাবা। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভেঙেছিল।
বাবা তাহলে আওয়ামী লীগের ব্যানারে  কেন লেখা থাকলো হাজারো মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া ২১ শে ফেব্রুয়ারি।
আমার সন্তান বললো বাবা কেন ভাষার জন্য আমরা প্রাণ দিয়েছিলাম?
আমি বললাম শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজকে আমরা আমাদের প্রাণের ভাষা বাংলাতে কথা বলতে পারছি। বাবা এটা যেমন আমাদের জন্য শোকের তেমনি এখন এটি আমাদের জন্য গর্বেরও বিষয়। আমরা আমাদের মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি। তুমি আমাকে বাবা বলতে পারছো। পৃথিবীতে কত ভাষা হারিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলা ভাষা টিকে থাকবে অনন্তকাল। পৃথিবী আমাদের ত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মার্র্তভাষা দিবস ঘোষনা করেছে। এইজন্য আমরা ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।
বাবা তাহলে আমি ইংরেজি স্কুলে পড়ি কেন? আর ইংরেজি না পারলে আমাকে শিক্ষক মারে কেন?
আমি বললাম বাবা বাংলা আমাদের প্রাণের ভাষা আর ইংরেজি হল আন্তর্জাতিক ভাষা। বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিও জানা প্রয়োজন। নতুবা পৃথিবীর অন্যান্য মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখবো কি করে? এই জন্য ইংরেজি শিখতে হয়।
আমার সন্তান বললো তাহলে ওরা বাংলা শিখেনা কেন?
আমি বললাম বাবা পৃথিবীর জ্ঞানের বেশিরভাগ বিষয়ই ইংরেজিতে লিখা। ইংরেজি জানলে পৃথিবীর সব জ্ঞান আহরণ করা যায়। তুমি যত বড় হবে তত দেখবে সব কঠিন কঠিন বিষয় বিজ্ঞান, দর্শন, শিল্প, সভ্যতার সব বই ইংরেজিতে লিখা । ইংরেজি না জানলে চলবে কি করে?
আমার সন্তান বললো বাবা তাহলে আমাদের বড়রা কঠিন কঠিন বিষয় বাংলাতে লিখেনা কেন?
 আমি বললাম আমরা গরিব দেশ আমাদের গবেষণা করার জন্য যথেষ্ঠ অর্থ নেই। আমাদের কাছে জীবিকাই মূখ্য। এখানে জ্ঞানের কদর কম। দু বেলা ভাত জোগাড় করতেই আমাদের জীবন শেষ।
বাবা তাহলে বিদেশীরা আমাদের ব্যাংক লুট করে কেন?
তোমাকে কে বললো বিদেশীরা আমাদের ব্যাংক লুট করে?
আমি জানি বাবা- পত্রিকায় পড়েছি আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংক লুট হয়ে গেছে। আমাদের রিজার্ভ কমতে শুরু করেছে। আমাদের বেসিক ব্যাংক, সোনালি ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংক সেখানেও জালিয়াতি ধরা পড়েছে। শেয়ার বাজারের টাকা উধাও হয়ে গেছে। পদ্মা সেতুর টাকা চুরি হয়ে গেছে। আরো অনেক অনেক চুরি হচ্ছে। কেন বাবা? আমরা কেন আমাদের ব্যাংকগুলোকে যতœ করে রাখতে পারিনা? তাহলেতো আর আমরা গরীব থাকতামনা। আর গবেষণা করার জন্য যথেষ্ঠ টাকা পাওয়া যেত।
আমি বললাম না বাবা এই সব আমাদের বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র, সব মিডিয়ার সৃষ্টি। আমরা এখন উন্নত দেশে পরিণত হচ্ছি। আমাদের জিডিপি আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।
বাবা তাহলে আমাদের স্কুলের পিয়নের ছেলে মেয়েরা কেন রাস্তায় থাকে। আমরা যদি উন্নত দেশ হই তবে আমাদের অনেককেই  না খেয়ে থাকতে হতনা।
আমি বললাম সব মিথ্যে। আমরা সবাই খুব ভালো ভাবে বেঁচে আছি। আমাদের কোন অভাব নেই।
বাবা মা তাহলে কেন আমাকে ভাত দিতে না পেরে কাঁদে। মা বলে চালের দাম নাকি অনেক বেশি আমাদের কেনার সামর্থ্য ফুরিয়ে আসছে। আমি মাংস খেতে চেয়েছিলাম মা আমাকে বকা দিয়ে বললো “আমাকে খা”। তোমার অফিস নাকি তোমাকে দেরি করে বেতন দেয়। মা তাই রান্না করতে পারেনা। বাবা তুমি জানো মা আমার স্কুলের বেতন দেওয়ার জন্য মায়ের অনেক জমানো টাকা ভেঙ্গে ফেলেছেন। বাড়িওয়ালা প্রতিদিন বাড়ি ভাড়ার জন্য আসে মাকে বকা দেয়।
আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলাম। জীবনে এই প্রথম এমন কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হলাম।
এসব সাময়িক। সব ঠিক হয়ে যাবে। দেশ এখন ডিজিটালে রুপান্তর হয়েছে। দেশে এখন ৪জি এসেছে।
বাবা ৪জি কি?
৪জি হল আরো শক্তিশালি। আরো দ্রুতগতির ইন্টারনেট আমরা ব্যবহার করতে পারবো।
বাবা তাহলে তোমাকে ফোন করলে কথা শুনতে পাইনা কেন? খালি নেটওয়ার্কে সমস্যা করে। গতকালকে আমি একটা ইংরেজি কবিতা শুনছিলাম ইন্টারনেটে। কিন্তু  ঠিকমত ইন্টারনেট পেলামনা।
বাবা আমাদের অনেক মানুষ। তাই আমাদের সমস্যাও অনেক।
কিন্তু বাবা আমাদেরতো অনেক হাত। সব হাত একসাথে থাকলেতো আমরা অনেক শক্তিশালি হতাম। মামা, চাচা সবাইতো বিদেশে গিয়ে কাজ করছে। বিদেশেতো কাজ করার লোক খুঁজে পায়না। আমাদের ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি হাত কাজ করলেতো আমরা গরীব থাকতে পারি না।
(চলবে)

বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

৭.০৭.২০১৭
ইমেজ ভাবায়, হাসায়, কাঁদায়, আর আমাকে অস্হির করে তোলে
জীবনটা কিছু সময়ের অতিক্রম। মাঝখানে কিছু মুহূর্ত, অবশেষে বিশাল শূণ্যতা...
২৪.০৭.২০১৭
বিষন্নতার আকাশে শেষ চাঁদটি ডুবে গেছে। মেঘেরা ছুটছে শবযাত্রায় অংশগ্রহণ করবে বলে। আমি একফালি কাঁটা চাঁদ নিয়ে বসে আছি তোমার অপেক্ষায়। গোধুলি লগ্নে শেষ আলোটায় চুমু খাব বলে বেড়িয়েছিলাম আলো ফোটার আগেই। আলোহীন প্রান্তরে কবিরা নি:শ্চুপ বসে আছে। আমি কাক ভেজা হয়ে নতজানুরত তোমার অপেক্ষায়। ফুল ফুটবে আর অকস্মাৎ ভেঙ্গে গেল ভোর রাতে দেখা মিষ্টি স্বপ্ন। তারপর কেটে গেল এক ইতিহাস। ভাল থেকো প্রিয় শিউলি ফুল.....
 ২৮.০৮.২০১৭
পুরনো গানগুলো ফিরে ফিরে আসে, বসন্তের সুবাতাস কল্পনার রংকে রাঙিয়ে দিয়ে যায়। পুরনো ড্রইং আবার সময়কে মনে করিয়ে দেয়। একি ফর্ম, একি রং, একি ঢং সব মিলে মিশে একাকার। কবিতার শব্দগুলো নেচে উঠে কিছু মিথ্যে সুরে। আমি আনমনে তাকিয়ে রই। পুরনো টেক্সচার হাত দিয়ে স্পর্শ করি নাকি হৃদয় দিয়ে! কিছু প্রশ্ন আজো অমিমাংসিত। শব্দে, কাব্যে, রং, রেখায় ভালবাসার আঙিনায়। মুহূর্ত ধরা দেয় কিছু কাল্পনিক স্মৃতিরেখায়। উফ্............ভালবাসার ১৪ টি গোলাপের রং এখনো কি শুকিয়ে যায়নি! বাতাসে কার্বলিক এসিডের গন্ধ কি আজো নাড়া দেয়? সব কিছু ধূসর। ব্ল্যাক হোলে হারিয়ে যাওয়া আমার অস্তিত্ব, আমার গন্ধ, আমার রং, রেখা, ফর্ম সব, সব...বাতাসে আজো শুকিয়ে যাওয়া গোলাপের গন্ধ শুনতে পাই। ডানা মেলে উড়ছি, উড়ছি..উড়ছি.. হঠাৎ দেখি আমার ডানা কেটে নিয়েছে ভালবাসার নীল পদ্ম। আমি শূণ্যে নির্বাসিত হই।

হারিয়েছি পথ

ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
০৬.০৯.২০১৭

শেষ ট্রেনটায় বাড়ি ফিরবো বলে পথ হারিয়েছি
অপেক্ষার প্রহর গুনছি
আচ্ছা শেষ ট্রেনটি যদি আর না আসে
তবে কি তুমি আমায় সঙ্গ দিবে সারারাত্রি?
মৃৃদু বাতাসে আমরা কিছু কথা কইবো আমাদের স্বপ্ন নিয়ে
যা আমাদের আজো বাঁচিয়ে রাখে।
বলতে পারো?
ভালবাসাহীন একটি রাত্রি মৃত্যুর সমান
আমি বাঁচিবার চাই।
হেমন্তের হলুদ লগনে শিস দেওয়া পাখির কলতানে আমি জীবনকে উপভোগ করতে চাই।
প্রিয়তমা, ছোট্ট এই জীবনে তুমি আমার সঙ্গী হবে?
পূর্ণিমার চাঁদ আলোকিত করবে মেঘেদের রাজ্য
দু একটি দুষ্টু মেঘ চাঁদ কেটে বেরিয়ে যাবে ¯্রােতের অনুকূলে।
আমি হাত দিয়ে স্পর্শ করি
কবিতার লাবণ্য ভরা যৌবন আমাকে বাঁচতে উজ্জীবিত করে
হায়! বাঁিচবার কি সাধ মানুষের।
মুহূর্ত অতীতে রূপ নেয়
বর্তমান জাহাজের মত বেরিয়ে যায়,
স্মৃতি সমুদ্রের ফেনার মত দূর অতীতে হারিয়ে যায়,
ভবিষ্যত যেন দিগন্ত রেখায় জল আর মেঘেদের কোলাকুলি।
সাদা গাংচিল হৃদয়ে দোলায়
আমি বাতাসে ভালবাসা ছুঁড়ে দেয়
সাদা গাংচিল টপ করে গিলে নেয় আমার ভালবাসা।
গাংচিল তুমি অন্তত আমার সঙ্গী হও
আমাকে তীরে পৌছে দিতে না পারলেও অন্তত সাগরের জলরাশি অতিক্রম করার সাহস দাও।
আরো কিছুক্ষন সঙ্গ দাও।
আমি অন্তত ঢেউয়ে ভাসতে শিখি
প্রিয়তমা, বাতাসে মিষ্টি বেলীর গন্ধ আমাকে আন্দোলিত করে
সমুদ্রের জলরাশি আমাকে ডাকে
খুব ইচ্ছে করে ডুবে যেতে তার কোমল বক্ষে।