বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬


ছাত্র ইউনিয়নের প্রতি

ফরহাদ উদ্দিন মাসুম১৮.০৮.২০১৬
আমি যখন চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র ছিলাম তখন চারুকলায় ছাত্র ইউনিয়নের কোন সম্মেলন হয়েছিল কিনা আমার জানা নেই। হয়তো রাজনীতিতে অনাগ্রহতা কিংবা অসচেতনতার কারনে চারুকলায় কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সম্মেলন সম্বন্ধে আমার কোনো ধারনা নেই।

ছাত্র রাজনীতির যদি প্রয়োজন হয় তবে সকল ছাত্র সংগঠনের সুস্থ, সুন্দর রাজনীতি চর্চার পরিবেশ থাকা বাঞ্জনীয়। দু:খজনক হলেও সত্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ, সুন্দর রাজনীতি চর্চার পরিবেশ নেই। ফলশ্রুতিতে চারুকলা অনুষদে স্বাভাবিক, সুস্থ, সুন্দর রাজনীতি চর্চা নেই। এখানে আছে কেবল ক্ষমতাভোগ, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি আর অসুস্থ চর্চা। ভাগ্যক্রমে কিংবা দুর্ভাগ্যক্রমে দুটি বড় দলের শাসনব্যবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হয়েছে। দুটি দলই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক দৌরাত্ম আমাদের দেখা। পেশি শক্তি, অর্থ লোভ, ক্ষমতা ভোগ যার অন্তিম লক্ষ্য। সেই ছাত্র রাজনীতি আদৌ আমাদের কোনো কাজে আসবে? আমার মনে হয় কোনো কাজে আসবেনা। যার ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি। প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক হানাহানি বিদ্যবান।

আজ যদি ছাত্রলীগের অনেক কর্মীকে তাদের রাজনৈতিক আদর্শ, উদ্দেশ্য ইত্যাদি সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হয়, আমার ধারনা বেশিরভাগ কর্মী সদুত্তর দিতে পারবেনা। কারন এখনকার ছাত্র রাজনীতিতে আদর্শ বলে কিছু নেই আর উদ্দেশ্য আমাদের সকলের জানা। বঙ্গবন্ধু বলতে বলতে ছাত্রলীগ মুখে ফেনা তুলে ফেলে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কি  তারা ধারন করতে পারে ? বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কি চাঁদাবাজি, হল দখল, টেন্ডারবাজি, অসুস্থ চর্চা ইত্যাদি ? আমার মনে হয়না।

অন্যদিকে শহীদ জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা, দেশগঠনে যার ভুমিকা রয়েছে। তার আদর্শের সংগঠনের কর্মীরা কি তাকে মন থেকে ধারন করতে পেরেছে ? আমার উত্তর না। সেখানেও দলবাজি, চাঁদাবাজি, পেশি শক্তি এবং অসুস্থ চর্চা বিদ্যমান। এই দুই বড় ছাত্র সংগঠনের কাছ থেকে আমার আর কোন চাওয়া নেই। এরা সব নষ্টদের অধিকারে চলে গেছে।

আমার দেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় আন্দোলন ছিল হুমায়ন আজাদ স্যার এর উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ, মিছিল, স্মারকলিপি পেশ ইত্যাদি। যে আন্দোলনের সুতিকাগার করেছিল ছাত্র ইউনিয়ন। তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকার এই আন্দোলনকে যে কোন মূল্যেই দমিয়ে রাখতে চেয়েছিল। তারা ভেবেছিল এই বিচারের জন্য আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রুপ নিতে পারে। আমার ধারনা সেই সময় হুমায়ন আজাদ স্যার এর উপর হামলার বিচার যতি হত তবে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ এত ভয়াবহ হত না। সব দলই জঙ্গিবাদকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে গেছে। সরকার দল সবসময় আইনশৃংখলা স্বাভাবিক দেখাতে চেয়েছিল যদিও দেশে প্রতিদিন অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। গনমানুষের আন্দোলনকে তারা ভয় পাই।

আমাকে চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞিÍত ঘোষনা করেছে কারন আমি ছাত্রলীগ এর অপকর্ম নিয়ে সমালোচনা করি। আমার মত সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের চারুকলা অনুষদ হতে অপমান করে বের করে না দিয়ে নিজেরা একটু সংশোধন হলে দেশ এবং দশের লাভ। শাক দিয়ে আর মাছ ঢাকা কতদিন ? বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন মতের অনুসারী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সব মানুষ সমান অভিজ্ঞতা নিয়ে বেড়ে উঠেনা। সকলের মনন একই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যায়না। কিন্তু প্রকৃত জ্ঞান সকল মত, পথ শোনার ধৈর্য্য রাখে। মত এবং পথ বেছে নেওয়ার দায়িত্ব তার নিজস্ব মেধা, মনন, আদর্শ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে।
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে সামলান”- এই কথা কেন শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হয়! মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ কি এমন! যারা একদিন মুক্তির কথা বলেছিল তারাই আজ সব কিছু গ্রাস করতে চাইছে।
এত কিছু বলার অর্থ ছাত্র ইউনিয়নের কাছে অনেক কিছু আশা করি। তারা আর যাই হোক, অন্তত ছাত্রলীগ, ছাত্রদল এদের মত হবেনা। ছাত্র ইউনিয়ন আমাদের মানবতার পথ দেখাবে, রাজনীতি সচেতন, সমাজ সচেতন করে তুলবে এই আশা করি।
চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তুলি মানুষের কথা বলুক, জীবনের কথা বলুক, সমাজের কথা বলুক।
শিল্পীর তুলি হোক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার- এই স্লোগানকে সামনে রেখে ছাত্র ইউনিয়ন আরো এগিয়ে যাবে এবং সমাজকে এগিয়ে নিবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।

বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

তোমাকে দিলাম প্রিয়তমা


তোমাকে দিলাম প্রিয়তমা

ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
১০/০২/২০১৬

ভালবাসার ১৪টি গোলাপ পচে গেলেও সদ্য নতুন ফোটা গোলাপ তোমাকে দিলাম প্রিয়তমা,
বাংলাদেশের প্রান্তরে প্রান্তরে ফোটা গোলাপ তোমাকে দিলাম প্রিয়তমা,
১৯৬ টি দেশের গোলাপ তোমাকে দিলাম প্রিয়তমা,
সাথে থাকবে নতুন স্বাধীন হবে এমন রাষ্ট্রের  ৭ টি নতুন গোলাপ,
স্বাধীনতার সোনালী সূর্যের আভা লেগে থাকবে আমার গোলাপে।
প্রিয়তমা তোমার জন্য রইলো সকালে ফোটা প্রথম গোলাপ, যার অপেক্ষায় আমি সারা রাত্রি জেগেছিলাম।
প্রিয়তমা, সদ্য ফোটা গোলাপটি তোমার নরম হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আমি অধীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি।
কখন তোমার ঘুম ভাঙবে?
আমি নতজানু হয়ে আমার সবকয়টি গোলাপ তোমার হাতে তুলে দিব
তুমি গ্রহণ করো
অন্তত মৃদু হাসো..
ভালবাসাময় হয়ে উঠুক আমার চারপাশ।