রাজনীতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রাজনীতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

শনিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৪

চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা ও মুখোশ

 

চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা ও মুখোশ

০১.০১.১৪৩০
১৪.৪.২০২৩

চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা খুব বেশীদিনের নয়, অনেকেই বলেন হাজার বছরের সংস্কৃতি। আদতে মোটেও এটি হাজার বছরের সংস্কৃতি নয়। খোদ চারুকলা প্রতিষ্ঠানেরই বয়স বেশিদিনের নয়। এখনো ১০০ বছর হয়নি। তবুও এটি ঢাকা শহর তথা বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। আমাদের বৈশাখ উদযাপন অনেক পুরনো। সেটি হয়তো হাজার বছরের সংস্কুতি। সেখানে হয়তো মঙ্গল শোভাযাত্রা ছিলনা কিন্তু বৈশাখ উদযাপন তথা নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার অনেক উপকরন ছিল যেমন: হালখাতা, বৈশাখী মেলা, নাগর দোলা, মুরালী, টেপা পুতুল, হাত পাখা, মাটির জিনিসপত্র, শখের হাঁড়ি ইত্যাদি।

হঠাৎ কোথা থেকে যেন উদয় হল বৈশাখী র‌্যালি তথা মঙ্গল শোভাযাত্রা। সারা ঢাকা বাসী আপন করে নিল এই বৈশাখী র‌্যালি তথা মঙ্গল শোভাযাত্রাকে। ধীরে ধীরে এটি সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়লো এবং আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠলো। যার শুরুটা হয়েছিল চারুকলা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এবং এখনো এর নেতৃত্বে চারুকলা প্রতিষ্ঠানই থাকে। কিন্তু কিসের বোধ থেকে এই বৈশাখী র‌্যালি তথা মঙ্গল শোভাযাত্রার শুরু……….

স্বৈরাচার প্রতিরোধে ঘৃনার এক প্রতিফলন ছিল এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। বর্ষবরনের পাশাপাশি যা ছিল শিল্পী/সচেতন মানুষের রাজনীতির বহি:প্রকাশ।

সংস্কৃতি আর রাজনীতি কি সম্পূর্ণ আলাদা? কিন্তু কখনো কখনোতো এক হয়ে উঠে যেমন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, বায়ান্ন। সংস্কৃতি কর্মীরাইতো এখানে তাদের রাজনীতির বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

এখন পাঠক বলতেই পারেন বৈশাখতো হাজার বছরের বাঙালীর সংস্কৃতি এখানে রাজনীতির কি আছে? আসলে মানুষ কোনো না কোনো ভাবে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। সে কোনো রাষ্ট্রে বাস করা মানেই সে রাজনীতির সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাজনীতি দ্বারা প্রভাবিত।

এখন বৈশাখ যেহেতু বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব এটার মর্যাদাই আলাদা। এটির প্রস্তুতি আলাদা। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই বৈশাখ উদযাপন করে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় তাই নানা রকমের জিনিসপত্র তৈরি হয় যেমন: মুখোশ, প্যাচা, বাঘ, হাতি, ঘোড়া, টেপা পুতুল ইত্যাদি। যা আসলে আমাদের সংস্কৃতিরই উপাদান। প্রতিটি জিনিস শুধু আমাদের আনন্দ দেয়না আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। বৈশাখ উদযাপনে পান্তাভাত আর ইলিশ কেন উঠে এসেছিল কারন এটিও আমাদের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। ইউরোপ, আমেরিকা, আরব, আফ্রিকা ওখানে পান্তাভাত ইলিশ পাওয়া যাবেনা কারন ওটা ওদের সংস্কৃতি না। কালের বিবর্তনে ইলিশ আমাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি ছিল বটে। যা আমরা এখনো বয়ে চলি।

এখন এই যে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি সাধারনের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে যার দরুন একজন দিনমজুর বলছেন “মাছ, মাংস ও চালের স্বাধীনতা চাই” – এটি হতে পারতো এবারের মঙ্গলশোভাযাত্রার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। তাহলে বৈশাখ সাধারন মানুষকেই তুলে ধরতো। সাধারন মানুষের সাথে মঙ্গলশোভাযাত্রার যোগাযোগ তৈরি হতো। সংস্কৃতি যদি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তবে তা মানুষের কাজে লাগেনা একসময় তা মৃত হয়ে পড়ে।

উপরন্তু শিল্পীরা সংবাদ মাধ্যমের মত প্রকাশের উপর সেন্সরশিপ আরোপ করতে চাই। এমনকি পত্রিকা বন্ধ করার জন্য তারা স্বাক্ষর দিয়েছেন। তারা শিল্পকর্মের উপরও সেন্সরশিপ আরোপের পক্ষে। সুতরাং মৌলবাদ এবং প্রগতিশীল নামধারী এইসব ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। আমাদের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যারা সংস্কৃতি রক্ষাকারি বলে নিজেদের মনে করে তারা আসলে সংস্কৃতি ধ্বংসকারী। শিল্পী নিসার স্যার এন্ড গংরা চাইনা চারুকলার বৈশাখ সার্বজনীন হোক। এতে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হয়। তারা বিএনপি আমলে সুশীল সাজে। আওয়ামী আমলে সরকারের আজ্ঞাবহ থাকে। কারন তারা যতটা না শিল্পী তার চেয়ে বেশী রাজনীতিবিদ।

হিন্দু মুসলিম সংঘর্ষ বহু পুরনো বিট্রিশরা যার সূত্রপাত ঘটিয়েছিল যাতে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হয়। বোকা হিন্দু মুসলিম এই ফাঁদে পা দিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় চারুকলার মুখোশের মত প্রগতিশীল নামধারী, সংস্কৃতির ঝান্ডাধারী কিছু মানুষ, কিছু রাজনীতিবিদ সেই পুরনো রাজনীতিকে এখনো বয়ে চলেছেন। এতে তাদের রাজনীতিতে সুবিধা হয়। তাদের ক্ষমতার মসনদ পাকাপোক্ত হয়।

যা আসলে এই জনপদের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকর। বৈশাখ নিয়ে এই রাজনীতি আমাদের জাতীয় জীবনে কখনো সুফল বয়ে আনবেনা। বৈশাখ হতে পারতো বাঙালীর (এপার বাংলা ওপার বাংলা) সবচেয়ে বড় উৎসব (ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে)। কিন্তু এইসব মুখোশধারী কিছু ব্যক্তি কখনো এটা হতে দিতে চাইনা। এ যেন সর্ষের ভিতর ভূত।

তাই হয়তো মঙ্গলশোভাযাত্রায় মুখোশ আমাদেরকেই তুলে ধরে।

সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা….

শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮

আবু বকরের মায়ের কান্না

আজ ৩রা ফেব্রুয়ারী। জানি বেশিরভাগ মানুষ ভুলে গেছেন। কয়দিন পরেই ৮ই ফালগুন। মনে পড়ে ৫২, মনে পড়ে ৭১, মনে পড়ে ৭১ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি। আমিও সেখানে ছিলাম ২০০৩-২০১২। আমি দেখিনি ভারত, দেখিনি ব্রিটিশ, দেখিনি পাকিস্তান, দেখেছি বাংলাদেশ। দেখেছি বাংলাদেশের দুইটি বড় রাজনৈতিক দলের শোষণ। প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণের চারুকলা, প্রিয় স্যার এ. এফ রহমান হল। জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করলাম এই ক্যাম্পাসে। আজ আমি লজ্জিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পেরে, নিজেকে কখনোই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পেরে গর্বিত মনে হয়না। নোংরা ছাত্র রাজনীতি, নোংরা শিক্ষক রাজনীতি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ময়লার ভাগারে পরিণত করেছে। এই জাতি বড়ই দুর্ভাগা চোখের সামনেই প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ডাস্টবিনে রুপান্তর হয়েছে। জানি সামনেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বাংলাদেশকে নের্তৃত্ব দিবে। কিন্তু আমি শংকিত এই বোধহীন মানুষের মত দেখতে প্রাণীগুলো যখন বাংলাদেশকে নের্তৃত্ব দিবে তখন জাতি কোনদিকে পরিচালিত হবে!
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
০৩.০২.২০১৮
বাংলাদেশে এখনো অনেক মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করে। এখনো মানুষ ফুটপাতে থাকে, রেল স্টেশনে থাকে, ওভার ব্রীজে থাকে, রাস্তায় থাকে, খোলা মাঠে থাকে, যেখানে একটু শরীর এলিয়ে দিয়ে যায়, সেখানে থাকে। রোদ-বৃ্ষ্টিতে মাথা গোজার ঠাঁই নাই। এখনো মানুষ ডাস্টবিন থেকে খাবার কুড়িয়ে খায়। এখনো অনেক মানুষ না খেয়ে রাত্রিযাপন করে কোনো রকম নিরাপত্তার কথা না ভেবেই। এখনো বিচার ব্যবস্থা চরম নাজুক। তবুও আমরা মনে করি আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে গেছি। হয়তো খুব দ্রুত উন্নত দেশের স্বীকৃতি পাবো। কিন্তু আসলে কি আমরা উন্নত হচ্ছি ? যতদিন দেশের সব মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ না হচ্ছে ততদিন এই উন্নয়নের কোনো মূল্য আছে ? হ্যা এটা ঠিক দেশের জিডিপি এগিয়েছে, দেশের রিজার্ভ বেড়েছে কিন্তু এই উন্নয়নের সুবিধা কারা ভোগ করছে ? শুধু উপরতলার মানুষ। দেশের শুধু অভিজাত শ্রেণীর উন্নয়ন মানে কি সারা বাংলাদেশের উন্নয়ন? আমরা কি এই জন্য স্বাধীনতা চেয়েছিলাম ? আমরা প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস উদযাপন করি। কিন্ত আমরা কি মনে রেখেছি আমরা কেন স্বাধীনতা চেয়েছি ?
পৃথিবীতে মধুরতম শব্দগুলোর একটি নাম “বিপ্লব আসন্ন”। বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক হায়- বিপ্লব

কোটা একটা ফাঁদ

ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
৪.১১.২০১৮
আমরা সবাই ক্রিকেটকে ভালবাসি। ক্রিকেট আমাদের অহংকার। ক্রিকেট আমাদের অলংকার। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ নানান সমস্যায় জর্জরিত- ক্ষুধা, দারিদ্রতা, অশিক্ষা, ধর্মীয় কুসংস্কার, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, খুন, ধর্ষন, অপরাধ প্রবণতা, সামাজিক বৈষম্য ইত্যাদি। এর মধ্যেও কিছু আশানিয়া বিষয় আছে যেমন- আমাদের গার্মেন্টস শিল্প, ঔষধ শিল্প, ক্রিকেট, খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা, কিছু বৈজ্ঞানিক সাফল্য, নোবেল প্রাপ্তি, কিছু ব্যাক্তিগত সাফল্য, নারীদের এগিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। আমাদের রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের পাহাড়সম দুর্নীতি সত্ত্বেও দেশ এগিয়েছে। এর অনেক কারন রয়েছে। এর মধ্যে আমাদের শ্রমশক্তি আমাদের অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা যদি আমাদের শ্রম শক্তিকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারি তবে পৃথিবীর বুকে আমরা অন্যতম সুখী সমৃদ্ধ দেশ হতে পারি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ ক্রিকেটে যখন বাংলাদেশ জিতে তখন অানন্দে লাফিয়ে উঠে। সব দু:খ কষ্ট ভুলে যায়। বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে চিৎকার করে উঠে। সারা বিশ্ব এখন আমাদের চিনে, কারন ত্রিকেটে আমরা এখন শক্তিশালী। পৃথিবীর যে কোন দলকে হারানোর ক্ষমতা আমরা রাখি। আমার বিশ্বাস খুব বেশি দিন নেই আমরা ত্রিকেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবো। স্টেডিয়াম জুড়ে বাংলাদেশের পতাকা উড়বে। আমার সোনার ছেলেরা বিশ্বকাপ হাতে আনন্দে উদ্বেলিত হবে। আমাদের দর্শকরা আনন্দ মিছিল করবে। এবং আমদের অনেকেই তখন কাঁদবে, এই কান্না কষ্টের নয় অনেক খুশির। আমি এই কান্নায় সামিল হতে চাই। এখন সেই ক্রিকেট দলকে যদি আমরা ৫৬ % কোটার মধ্যে নিয়ে আসি তবে কেমন হবে? মুত্তিযোদ্ধা কোটা ৩০% মানে ৩.৩জন, প্রতিবন্ধী কোটা ১% মানে ০.১১ জন, আদিবাসি কোটা ৫ % মানে ০.৫৫ জন, নারী ও অন্যান্য কোটা ২০% মানে ২.২ জন। তখন আমরা কি পারবো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে ? আমাদের ভাবার সময় এসে গেছে আমরা কি দেশকে এগিয়ে নিব নাকি পিছিয়ে দিব? কোটা একটা ফাঁদ। এটা বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে আমরা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধারা কি সত্যিই এই সুবিধা পাচ্ছে নাকি তাদের নামে অন্যরা এই সুবিধা ভোগ করছে। মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সেটা কি কোটার জন্য ! বাংলাদেশের অনেক মানুষ যুদ্ধ করেছেন যাঁরা যুদ্ধ কি জিনিস জানতোনা। অস্ত্র চালাতে জানতোনা। শুধুমাত্র দেশকে ভালোবাসার জন্য, দেশের মুক্তির জন্য তাঁরা নিজের জীবন বাজি রেখেছেন। যিনি দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করতে পারেন উনি দেশ গঠনের জন্য তাঁর সন্তানকে প্রস্তুত করতে পারেন। তাঁর পরিবারকে প্রস্তুত করতে পারেন। তাঁর কোটার প্রয়োজন হবেনা। অন্তত আমি তাই বিশ্বাস করি। তাই কোটা নয় মেধাবীদের মূল্যায়ন করুন। এই মেধাবীরাই সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। আসুন কোটার ফাঁদ হতে দেশকে মুক্ত করি। কোটা নিয়ে আর দুর্নীতি নয়। কোটা নামের জুজুর কারনে মাস্টার্স পাশ মেধাবী ছাত্রের জন্য এস এস সি ফেল নেতার সুপারিশ লাগে। বাংলাদেশে একজন পিয়নের জন্য এখন এস এস সি পাশ নিয়োগ সার্কুলার দেওয়া হয়। আমার দেখা একজন মাস্টার্স পাশ ব্যাক্তি পিয়নের চাকরী করেছেন কারন সরকারী চাকরী করতে চান। কারন ৩০ বছর পর সরকারী চাকরী পাওয়া যায়না। পরবর্তীতে তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের উন্নতি ঘটিয়েছেন বর্তমানে শিক্ষা বিভাগে কর্মরত। অন্তত এইটুকু বুঝতে পারলাম উনি মেধাবী। মেধাবী না হলে তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের উন্নতি ঘটাতে পারতেননা। অথচ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ পদে একজন ৮ম শ্রেণী পাশ নিয়োগ পায়। কারন কোটা। বাবা কোটা, স্বামী কোটা, নাতি কোটা, ভাই কোটা, বোন কোটা, নেতা কোটা, নেতার পতি কোটা, মামা কোটা, চাচা কোটা, পারাতো কোটা, সন্ত্রাসী কোটা, জেলা কোটা, এলাকা কোটা ইত্যাদি কোটায় জাতি জর্জরিত। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। প্রতিটি মানুষ মেধা বিকাশের সুযোগ পাক।
একটা প্রশ্ন ঘুরছে মাথায় ১৯৭২ থেকে কোটা প্রথা চালু আছে তাহলে সিরাজ সিকদারকে কার নির্দেশে যেন ১৯৭৩ সালের জানুয়ারী মাসে রাষ্ট্রীয় বাহিনী বিনা বিচারে হত্যা করেছিল ? তিনিতো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাঁর কোটা তখন কোথায় ছিল? স্বাধীন দেশে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে মরতে হল কেন? সেই থেকে আমাদের বিচার বহির্ভূত হত্যা শুরু। যার পরবর্তী রূপ হলো র‍্যাব।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খন্দকার মোশতাক তারপর খালেদ মোশারফ তারপর সিপাহী বিপ্লব। তারপর কার নির্দেশে যেন মিথ্যে আইনে বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরের ফাঁসি হয়েছিল। কেন? তখন কোটা কোথায় ছিল? তাঁর সন্তানেরা এখন কোটার সুবিধা কি পাচ্ছে ! এই হত্যাগুলোর বিচার হল না কেন? বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধার মুল রুপকার তাজ উদ্দিন আহমেদ এর হত্যার বিচার হল কি? তাঁকে
তো ইতিহাস ভুলতে বসেছে। কেন? তাঁর সন্তানেরা কোটার সুবিধা পাচ্ছে কি? স্বাধীন দেশে তিনি প্রায় নিগ্রিহ ছিলেন। কেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকরকে জানি কারা মেরেছিল ? এহসানকে জানি কারা মেরেছিল ? বিশ্বজিৎকে
জানি কারা মেরেছিল ? আর কত নির্লজ্জ হলে অমানুষ চেনা যায় !!!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঁধনকে জানি কারা প্রকাশ্য রাস্তায় শ্লীলতাহানি করেছিল ? জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কে জানি ধর্ষণের সেঞ্চুরি করেছিল ? আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?

বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৬


ছাত্র ইউনিয়নের প্রতি

ফরহাদ উদ্দিন মাসুম১৮.০৮.২০১৬
আমি যখন চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র ছিলাম তখন চারুকলায় ছাত্র ইউনিয়নের কোন সম্মেলন হয়েছিল কিনা আমার জানা নেই। হয়তো রাজনীতিতে অনাগ্রহতা কিংবা অসচেতনতার কারনে চারুকলায় কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সম্মেলন সম্বন্ধে আমার কোনো ধারনা নেই।

ছাত্র রাজনীতির যদি প্রয়োজন হয় তবে সকল ছাত্র সংগঠনের সুস্থ, সুন্দর রাজনীতি চর্চার পরিবেশ থাকা বাঞ্জনীয়। দু:খজনক হলেও সত্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুস্থ, সুন্দর রাজনীতি চর্চার পরিবেশ নেই। ফলশ্রুতিতে চারুকলা অনুষদে স্বাভাবিক, সুস্থ, সুন্দর রাজনীতি চর্চা নেই। এখানে আছে কেবল ক্ষমতাভোগ, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি আর অসুস্থ চর্চা। ভাগ্যক্রমে কিংবা দুর্ভাগ্যক্রমে দুটি বড় দলের শাসনব্যবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হয়েছে। দুটি দলই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক দৌরাত্ম আমাদের দেখা। পেশি শক্তি, অর্থ লোভ, ক্ষমতা ভোগ যার অন্তিম লক্ষ্য। সেই ছাত্র রাজনীতি আদৌ আমাদের কোনো কাজে আসবে? আমার মনে হয় কোনো কাজে আসবেনা। যার ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি। প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক হানাহানি বিদ্যবান।

আজ যদি ছাত্রলীগের অনেক কর্মীকে তাদের রাজনৈতিক আদর্শ, উদ্দেশ্য ইত্যাদি সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হয়, আমার ধারনা বেশিরভাগ কর্মী সদুত্তর দিতে পারবেনা। কারন এখনকার ছাত্র রাজনীতিতে আদর্শ বলে কিছু নেই আর উদ্দেশ্য আমাদের সকলের জানা। বঙ্গবন্ধু বলতে বলতে ছাত্রলীগ মুখে ফেনা তুলে ফেলে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কি  তারা ধারন করতে পারে ? বঙ্গবন্ধুর আদর্শ কি চাঁদাবাজি, হল দখল, টেন্ডারবাজি, অসুস্থ চর্চা ইত্যাদি ? আমার মনে হয়না।

অন্যদিকে শহীদ জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা, দেশগঠনে যার ভুমিকা রয়েছে। তার আদর্শের সংগঠনের কর্মীরা কি তাকে মন থেকে ধারন করতে পেরেছে ? আমার উত্তর না। সেখানেও দলবাজি, চাঁদাবাজি, পেশি শক্তি এবং অসুস্থ চর্চা বিদ্যমান। এই দুই বড় ছাত্র সংগঠনের কাছ থেকে আমার আর কোন চাওয়া নেই। এরা সব নষ্টদের অধিকারে চলে গেছে।

আমার দেখা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় আন্দোলন ছিল হুমায়ন আজাদ স্যার এর উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ, মিছিল, স্মারকলিপি পেশ ইত্যাদি। যে আন্দোলনের সুতিকাগার করেছিল ছাত্র ইউনিয়ন। তৎকালীন ক্ষমতাসীন সরকার এই আন্দোলনকে যে কোন মূল্যেই দমিয়ে রাখতে চেয়েছিল। তারা ভেবেছিল এই বিচারের জন্য আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রুপ নিতে পারে। আমার ধারনা সেই সময় হুমায়ন আজাদ স্যার এর উপর হামলার বিচার যতি হত তবে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ এত ভয়াবহ হত না। সব দলই জঙ্গিবাদকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে গেছে। সরকার দল সবসময় আইনশৃংখলা স্বাভাবিক দেখাতে চেয়েছিল যদিও দেশে প্রতিদিন অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। গনমানুষের আন্দোলনকে তারা ভয় পাই।

আমাকে চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞিÍত ঘোষনা করেছে কারন আমি ছাত্রলীগ এর অপকর্ম নিয়ে সমালোচনা করি। আমার মত সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের চারুকলা অনুষদ হতে অপমান করে বের করে না দিয়ে নিজেরা একটু সংশোধন হলে দেশ এবং দশের লাভ। শাক দিয়ে আর মাছ ঢাকা কতদিন ? বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন মতের অনুসারী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সব মানুষ সমান অভিজ্ঞতা নিয়ে বেড়ে উঠেনা। সকলের মনন একই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যায়না। কিন্তু প্রকৃত জ্ঞান সকল মত, পথ শোনার ধৈর্য্য রাখে। মত এবং পথ বেছে নেওয়ার দায়িত্ব তার নিজস্ব মেধা, মনন, আদর্শ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে।
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে সামলান”- এই কথা কেন শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হয়! মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ কি এমন! যারা একদিন মুক্তির কথা বলেছিল তারাই আজ সব কিছু গ্রাস করতে চাইছে।
এত কিছু বলার অর্থ ছাত্র ইউনিয়নের কাছে অনেক কিছু আশা করি। তারা আর যাই হোক, অন্তত ছাত্রলীগ, ছাত্রদল এদের মত হবেনা। ছাত্র ইউনিয়ন আমাদের মানবতার পথ দেখাবে, রাজনীতি সচেতন, সমাজ সচেতন করে তুলবে এই আশা করি।
চারুকলা অনুষদের শিল্পীদের তুলি মানুষের কথা বলুক, জীবনের কথা বলুক, সমাজের কথা বলুক।
শিল্পীর তুলি হোক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার- এই স্লোগানকে সামনে রেখে ছাত্র ইউনিয়ন আরো এগিয়ে যাবে এবং সমাজকে এগিয়ে নিবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।

বুধবার, ৭ জানুয়ারী, ২০১৫

৭১ দেখেনি কিন্তু কেন যেন অনুভব করছি

৭১ দেখেনি কিন্তু কেন যেন অনুভব করছি
ফরহাদ ইদ্দিন মাসুম

গত ৪/১/২০১৫ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসছিলাম। টিকেট পেতে যথারীতি বেগ পেতে হলো। টিভিতে স্ত্রল আসছে ঢাকার সাথে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ। আমার যাওয়া জরুরি। ৫ জানুয়ারির সমাবেশের কারনে সব কিছু থমকে দেওয়া হলো। যদি টানা অবরোধ কিংবা হরতাল দিয়ে দেয় আমি আটকা পড়ে যাবো। সুতরাং ট্রেন ভরসা। সোনার হরিণ ট্রেনের টিকেটের জন্য অপেক্ষা। আমার মত অনেকেই ট্রেনের টিকেটের জন্য ভিড় করলো। ট্রেনের টিকেট পাওয়া হলোনা। এক বন্ধুকে বারবার ফোন করছি বাস ছাড়বে কিনা জানানোর জন্য। সেও আমার মত অসহায় হয়ে পড়েছে আগেই টিকেট কিনেছে কিন্তু গাড়ি ছাড়বে কিনা বাস কাউন্টার জানাতে পারছেনা। অবশেষে বাস কাউন্টার জানালো গাড়ি ছাড়বে তবে রাত ৯ টায় যেখানে গাড়ি ছাড়ার কথা ১১ টার পর। ১২ টার পর গাড়ি ছাড়লে সকালে ঢাকায় প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়বে তাই আগেই বাস ছাড়ছে। তাই দেরি না করে বাসের টিকেটের জন্য গেলাম। সেখানেও ভিড় তবে টিকেট কেনার জন্য নয় ফেরত দেওয়ার জন্য। সবাই জিগ্যেস করছে ভাই গাড়ী ছাড়বে ?  কিছুটা স্বস্তি পেলাম গাড়ী ছাড়বে। বাসের টিকেট কিনলামনা কারন বুঝলাম বেশিরভাগ লোক টিকেট ফেরত দিতে চাইছে নিরাপত্তার ভয়ে। আমার আগে থেকে টিকেট কিনতে ভয় করে যদি গাড়ী ধরতে না পারি। চলে যাচ্ছিলাম তারপর একটু ভয় পেলাম যদি গাড়ী কমিয়ে ফেলে। তাহলেতো টিকেট পাবনা। তাই বাসের টিকেট কিনে ফেললাম। পরিবারের সবাই আতংকিত এই পরিস্থিতিতে যাতায়াত করতে চাইছি। কিন্তু জীবনতো থেমে রাখা যায়না। কর্মক্ষেত্রে ফিরতেই হয়।

কাউন্টারে অনেক আগেই চলে আসলাম যদি গাড়ি আগে ছেড়ে দেয় সেই ভয়ে। আমার নির্দিষ্ট যাত্রার আগে যে বাস ছাড়ছে তার লোক আসেনি তাই আমাকে টিকেট পরিবর্তন করার কথা বললো। আগের গাড়িতে চলে যেতে বললো। কিছুটা সন্দিহান হয়ে পড়লাম। আমার মতো কিছু মানুষ তবু গাড়িতে উঠছে। বাস কন্ট্রাকটার বাসের জানালা বন্ধ করে দিল গন্ডগোলের আশংকায়। কেউ কেউ সম্মতি জানালো। আমার জানালা বন্ধ রাখতে অস্বস্তি হয় তবুও মেনে নিলাম। কেউ কেউ খোলা রাখছিলো গরম এবং দম বন্ধ করা পরিবেশের কারনে। কন্ট্রাকটার কঠিন হয়ে গেল ককটেল, পেট্রোল বোমা, ইট ইত্যাদির কারনে। জোর করে জানালা বন্ধ করে পর্দা টেনে দিল যেন কিছুর আঘাতে গ্লাস ভেঙ্গে সরাসরি গায়ে না পড়ে। সবাই বেশ আতংকিত। কন্ট্রাকটারের আচরনে আতংক আবারো ছড়িয়ে পড়লো। ৭১ দেখেনি কিন্তু কেন যেন অনুভব করছি। সেই সময় হানাদারদের ভয়ে মানুষ যাতায়াত করতে ভয় পেত। মুক্তিবাহিনী সন্দেহে সাধারন মানুষকে হত্যা করতো বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।

তবে এখন হানাদার কারা ! এখন কিসের ভয় !

সময় বদলেছে সমাজ ব্যবস্থা বদলেছে কিন্তু সেই আতংক এখনো রয়ে গেছে। সাধারন মানুষ এখনো স্বাধীনভাবে যাতায়াত করছে পারছেনা। কেন এই ভয় ! স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে আমাকে কেন হরতাল, অবরোধ ইত্যাদির দোহাই দিয়ে আমার স্বাভাবিক জীবনপ্রবাহকে থমকে দিবে ? তাদেরকে এই অধিকার কে দিয়েছে ? গনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে তারা যা খুশি তাই করছে। একদল গনতন্ত্র উদ্ধারের নাম করে সাফল্যের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে অন্যদল গনতন্ত্রের মৃত্যুবার্তা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। একদল সমাবেশ করতে চাইছে অন্যদল সমাবেশ ভন্ডুল করতে চাইছে।

এতে সাধারন মানুষের কি লাভ হচ্ছে। তারা কোন সত্যিটা উপলব্ধি করছে। কিংবা তাদের কোন তথ্যটা দেওয়া হচ্ছে। সেটাকি সত্যি ? রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সুবিধামত গালভরা গল্প আমাদের জানাচ্ছে। আমাদের জীবন, সময়ের মূল্য তাদের কাছে নেই। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো আদৌ জানে “গনতন্ত্র কি” ?

রাজতন্ত্র, এককতন্ত্র, দলতন্ত্রের ভূত থেকে আমরা কবে রক্ষা পাবো ? কবে সত্যিকারের গনতন্ত্র আসবে ?