৭১ দেখেনি কিন্তু কেন যেন অনুভব করছি
ফরহাদ ইদ্দিন মাসুম
গত ৪/১/২০১৫ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসছিলাম। টিকেট পেতে যথারীতি বেগ পেতে হলো। টিভিতে স্ত্রল আসছে ঢাকার সাথে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ। আমার যাওয়া জরুরি। ৫ জানুয়ারির সমাবেশের কারনে সব কিছু থমকে দেওয়া হলো। যদি টানা অবরোধ কিংবা হরতাল দিয়ে দেয় আমি আটকা পড়ে যাবো। সুতরাং ট্রেন ভরসা। সোনার হরিণ ট্রেনের টিকেটের জন্য অপেক্ষা। আমার মত অনেকেই ট্রেনের টিকেটের জন্য ভিড় করলো। ট্রেনের টিকেট পাওয়া হলোনা। এক বন্ধুকে বারবার ফোন করছি বাস ছাড়বে কিনা জানানোর জন্য। সেও আমার মত অসহায় হয়ে পড়েছে আগেই টিকেট কিনেছে কিন্তু গাড়ি ছাড়বে কিনা বাস কাউন্টার জানাতে পারছেনা। অবশেষে বাস কাউন্টার জানালো গাড়ি ছাড়বে তবে রাত ৯ টায় যেখানে গাড়ি ছাড়ার কথা ১১ টার পর। ১২ টার পর গাড়ি ছাড়লে সকালে ঢাকায় প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়বে তাই আগেই বাস ছাড়ছে। তাই দেরি না করে বাসের টিকেটের জন্য গেলাম। সেখানেও ভিড় তবে টিকেট কেনার জন্য নয় ফেরত দেওয়ার জন্য। সবাই জিগ্যেস করছে ভাই গাড়ী ছাড়বে ? কিছুটা স্বস্তি পেলাম গাড়ী ছাড়বে। বাসের টিকেট কিনলামনা কারন বুঝলাম বেশিরভাগ লোক টিকেট ফেরত দিতে চাইছে নিরাপত্তার ভয়ে। আমার আগে থেকে টিকেট কিনতে ভয় করে যদি গাড়ী ধরতে না পারি। চলে যাচ্ছিলাম তারপর একটু ভয় পেলাম যদি গাড়ী কমিয়ে ফেলে। তাহলেতো টিকেট পাবনা। তাই বাসের টিকেট কিনে ফেললাম। পরিবারের সবাই আতংকিত এই পরিস্থিতিতে যাতায়াত করতে চাইছি। কিন্তু জীবনতো থেমে রাখা যায়না। কর্মক্ষেত্রে ফিরতেই হয়।
কাউন্টারে অনেক আগেই চলে আসলাম যদি গাড়ি আগে ছেড়ে দেয় সেই ভয়ে। আমার নির্দিষ্ট যাত্রার আগে যে বাস ছাড়ছে তার লোক আসেনি তাই আমাকে টিকেট পরিবর্তন করার কথা বললো। আগের গাড়িতে চলে যেতে বললো। কিছুটা সন্দিহান হয়ে পড়লাম। আমার মতো কিছু মানুষ তবু গাড়িতে উঠছে। বাস কন্ট্রাকটার বাসের জানালা বন্ধ করে দিল গন্ডগোলের আশংকায়। কেউ কেউ সম্মতি জানালো। আমার জানালা বন্ধ রাখতে অস্বস্তি হয় তবুও মেনে নিলাম। কেউ কেউ খোলা রাখছিলো গরম এবং দম বন্ধ করা পরিবেশের কারনে। কন্ট্রাকটার কঠিন হয়ে গেল ককটেল, পেট্রোল বোমা, ইট ইত্যাদির কারনে। জোর করে জানালা বন্ধ করে পর্দা টেনে দিল যেন কিছুর আঘাতে গ্লাস ভেঙ্গে সরাসরি গায়ে না পড়ে। সবাই বেশ আতংকিত। কন্ট্রাকটারের আচরনে আতংক আবারো ছড়িয়ে পড়লো। ৭১ দেখেনি কিন্তু কেন যেন অনুভব করছি। সেই সময় হানাদারদের ভয়ে মানুষ যাতায়াত করতে ভয় পেত। মুক্তিবাহিনী সন্দেহে সাধারন মানুষকে হত্যা করতো বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
তবে এখন হানাদার কারা ! এখন কিসের ভয় !
সময় বদলেছে সমাজ ব্যবস্থা বদলেছে কিন্তু সেই আতংক এখনো রয়ে গেছে। সাধারন মানুষ এখনো স্বাধীনভাবে যাতায়াত করছে পারছেনা। কেন এই ভয় ! স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে আমাকে কেন হরতাল, অবরোধ ইত্যাদির দোহাই দিয়ে আমার স্বাভাবিক জীবনপ্রবাহকে থমকে দিবে ? তাদেরকে এই অধিকার কে দিয়েছে ? গনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে তারা যা খুশি তাই করছে। একদল গনতন্ত্র উদ্ধারের নাম করে সাফল্যের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে অন্যদল গনতন্ত্রের মৃত্যুবার্তা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। একদল সমাবেশ করতে চাইছে অন্যদল সমাবেশ ভন্ডুল করতে চাইছে।
এতে সাধারন মানুষের কি লাভ হচ্ছে। তারা কোন সত্যিটা উপলব্ধি করছে। কিংবা তাদের কোন তথ্যটা দেওয়া হচ্ছে। সেটাকি সত্যি ? রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সুবিধামত গালভরা গল্প আমাদের জানাচ্ছে। আমাদের জীবন, সময়ের মূল্য তাদের কাছে নেই। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো আদৌ জানে “গনতন্ত্র কি” ?
রাজতন্ত্র, এককতন্ত্র, দলতন্ত্রের ভূত থেকে আমরা কবে রক্ষা পাবো ? কবে সত্যিকারের গনতন্ত্র আসবে ?
ফরহাদ ইদ্দিন মাসুম
গত ৪/১/২০১৫ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসছিলাম। টিকেট পেতে যথারীতি বেগ পেতে হলো। টিভিতে স্ত্রল আসছে ঢাকার সাথে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ। আমার যাওয়া জরুরি। ৫ জানুয়ারির সমাবেশের কারনে সব কিছু থমকে দেওয়া হলো। যদি টানা অবরোধ কিংবা হরতাল দিয়ে দেয় আমি আটকা পড়ে যাবো। সুতরাং ট্রেন ভরসা। সোনার হরিণ ট্রেনের টিকেটের জন্য অপেক্ষা। আমার মত অনেকেই ট্রেনের টিকেটের জন্য ভিড় করলো। ট্রেনের টিকেট পাওয়া হলোনা। এক বন্ধুকে বারবার ফোন করছি বাস ছাড়বে কিনা জানানোর জন্য। সেও আমার মত অসহায় হয়ে পড়েছে আগেই টিকেট কিনেছে কিন্তু গাড়ি ছাড়বে কিনা বাস কাউন্টার জানাতে পারছেনা। অবশেষে বাস কাউন্টার জানালো গাড়ি ছাড়বে তবে রাত ৯ টায় যেখানে গাড়ি ছাড়ার কথা ১১ টার পর। ১২ টার পর গাড়ি ছাড়লে সকালে ঢাকায় প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়বে তাই আগেই বাস ছাড়ছে। তাই দেরি না করে বাসের টিকেটের জন্য গেলাম। সেখানেও ভিড় তবে টিকেট কেনার জন্য নয় ফেরত দেওয়ার জন্য। সবাই জিগ্যেস করছে ভাই গাড়ী ছাড়বে ? কিছুটা স্বস্তি পেলাম গাড়ী ছাড়বে। বাসের টিকেট কিনলামনা কারন বুঝলাম বেশিরভাগ লোক টিকেট ফেরত দিতে চাইছে নিরাপত্তার ভয়ে। আমার আগে থেকে টিকেট কিনতে ভয় করে যদি গাড়ী ধরতে না পারি। চলে যাচ্ছিলাম তারপর একটু ভয় পেলাম যদি গাড়ী কমিয়ে ফেলে। তাহলেতো টিকেট পাবনা। তাই বাসের টিকেট কিনে ফেললাম। পরিবারের সবাই আতংকিত এই পরিস্থিতিতে যাতায়াত করতে চাইছি। কিন্তু জীবনতো থেমে রাখা যায়না। কর্মক্ষেত্রে ফিরতেই হয়।
কাউন্টারে অনেক আগেই চলে আসলাম যদি গাড়ি আগে ছেড়ে দেয় সেই ভয়ে। আমার নির্দিষ্ট যাত্রার আগে যে বাস ছাড়ছে তার লোক আসেনি তাই আমাকে টিকেট পরিবর্তন করার কথা বললো। আগের গাড়িতে চলে যেতে বললো। কিছুটা সন্দিহান হয়ে পড়লাম। আমার মতো কিছু মানুষ তবু গাড়িতে উঠছে। বাস কন্ট্রাকটার বাসের জানালা বন্ধ করে দিল গন্ডগোলের আশংকায়। কেউ কেউ সম্মতি জানালো। আমার জানালা বন্ধ রাখতে অস্বস্তি হয় তবুও মেনে নিলাম। কেউ কেউ খোলা রাখছিলো গরম এবং দম বন্ধ করা পরিবেশের কারনে। কন্ট্রাকটার কঠিন হয়ে গেল ককটেল, পেট্রোল বোমা, ইট ইত্যাদির কারনে। জোর করে জানালা বন্ধ করে পর্দা টেনে দিল যেন কিছুর আঘাতে গ্লাস ভেঙ্গে সরাসরি গায়ে না পড়ে। সবাই বেশ আতংকিত। কন্ট্রাকটারের আচরনে আতংক আবারো ছড়িয়ে পড়লো। ৭১ দেখেনি কিন্তু কেন যেন অনুভব করছি। সেই সময় হানাদারদের ভয়ে মানুষ যাতায়াত করতে ভয় পেত। মুক্তিবাহিনী সন্দেহে সাধারন মানুষকে হত্যা করতো বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
তবে এখন হানাদার কারা ! এখন কিসের ভয় !
সময় বদলেছে সমাজ ব্যবস্থা বদলেছে কিন্তু সেই আতংক এখনো রয়ে গেছে। সাধারন মানুষ এখনো স্বাধীনভাবে যাতায়াত করছে পারছেনা। কেন এই ভয় ! স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে আমাকে কেন হরতাল, অবরোধ ইত্যাদির দোহাই দিয়ে আমার স্বাভাবিক জীবনপ্রবাহকে থমকে দিবে ? তাদেরকে এই অধিকার কে দিয়েছে ? গনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে তারা যা খুশি তাই করছে। একদল গনতন্ত্র উদ্ধারের নাম করে সাফল্যের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে অন্যদল গনতন্ত্রের মৃত্যুবার্তা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। একদল সমাবেশ করতে চাইছে অন্যদল সমাবেশ ভন্ডুল করতে চাইছে।
এতে সাধারন মানুষের কি লাভ হচ্ছে। তারা কোন সত্যিটা উপলব্ধি করছে। কিংবা তাদের কোন তথ্যটা দেওয়া হচ্ছে। সেটাকি সত্যি ? রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সুবিধামত গালভরা গল্প আমাদের জানাচ্ছে। আমাদের জীবন, সময়ের মূল্য তাদের কাছে নেই। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো আদৌ জানে “গনতন্ত্র কি” ?
রাজতন্ত্র, এককতন্ত্র, দলতন্ত্রের ভূত থেকে আমরা কবে রক্ষা পাবো ? কবে সত্যিকারের গনতন্ত্র আসবে ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন