শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮

বাংলা নববর্


হাজার বছর বাঙ্গালির ইতিহাস। রাজতন্ত্রের ভয়াল সময় পেরিয়ে আজ বাঙালি অন্য এক সময়ে এসে পড়েছে। বিদেশি শাসক- মোঘল, ব্রিটিশ উপনিবেশ, পাকিস্থান শাসন তারপর মুক্তির সংগ্রাম। তারপর যুদ্ধাত্তর পরবর্তী অস্থিরতা , সেনা ক্যু, স্বৈরাচার শাসন, গণতন্ত্র নামক রসিকতা, ভোটের রাজনীতি কিছুই বাঙ্গালির রক্ত ত্যাগ ছাড়া হয়নি। বাঙ্গালির জন্মই হয়েছে যেন প্রতিবাদ করার জন্য আর গুলি খেয়ে মরার জন্য। প্রতিটি সময়ে বাংলায় জন্ম হয়েছে কিছু সাহসী সূর্য পুরুষের- সূর্য সেন, ৭ বীর শ্রেষ্ঠ, তাজ উদ্দিন, কর্নেল তাহের, সিরাজ সিকদার, বীর বিক্রম, বীর প্রতীক, সেক্টর কমান্ডার, নজ্রুল, রবীন্দ্রনাথ, জয়নুল, কাম্রুল, সুলতানসহ আরো অনেকে। কিছু বাতিক্রম অবশ্যই  আছে- যারা শুধু মমতাময়ী মা নন, লালন করেছেন, পালন করেছেন প্রান দিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন  অনেক মানুষকে- প্রীতিলতা, বেগম রোকেয়া, জাহানারা ইমাম এই রকম আরো অনেক। কিছু বিশ্বাসঘাতক বরাবরই বাঙ্গালিকে পিছিয়ে দিয়েছে। ইতিহাস যার নাম দিয়েছে মীর জাফর, রাজাকার, আলবদর, আলশামস। তবুও বাঙালি সাহস করে বলেছে- ‘ভাত দে হারামজাদা নইলে মান চিত্র খাবো’। জয় বাংলা যেন বাঙ্গালিকে সাহস জুগিয়েছে, প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছে, ভুমি দিয়েছে, দেশ দিয়েছে। যে দেশে শুধু বাঙালি নয় বাস করে অনেক ভিন্ন ভিন্ন জাতিসত্তা। চাকমা , মারমা, মুরং, গারো, মনিপুরি, ত্রিপুরা, তন্চংগ্যা, রাখাইন ইত্যাদি। ধর্ম, বর্ণ, ভাষা,   সংস্কৃতির বৈচিত্র্য কি নেই বাংলাদেশে। প্রায় প্রতি ১২ কিলোমিটার পর পর ভাষার বৈচিত্র্য দেখতে পাই আমরা। ইতিহাসের সাথে সাথে বাঙালি জনপথের নাম বদলে যায়। আমরা পায় প্রাণের বাংলাদেশ। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি।
বাঙালি প্রতিবাদ করে, প্রাণ দেয় আবার ভুলে যায় কেন প্রতিবাদ করেছিল। বাঙ্গালির এমন রহস্যময় চরিত্র উপলব্ধি করেছেন হুমায়ন আজাদ। যাকে ইতিহাসের সেই বিশ্বাস ঘাতক্ রা হত্যা করেছিল। যুগে যুগে তবুও জন্ম নেয় বাঙ্গালির ঘরে এমন মানুষ- যারা মানুষের কথা হলে। বাঙালি এই নামটি যেন রক্ত দিয়ে লেখা। শোষণ, বঞ্চনা ইত্যাদির পরও বাঙালি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু বাঙ্গালি মেয়েরা বড্ড ন্যাকা। তারা যেন ঘর সংসার ছাড়া কিছুই বুঝেনা। একটুকরো ভাত কাপড় পেলে তাতেই খুশি হোকনা তাতে তরকারি বাসি। তারপরও বাঙ্গালির ঘরে কেমন করে যেন কিছু সাহসী মেয়ের জন্ম হয়। আমাকে নতুন করে ভাবতে শেখায়। আমাকে শেখায় তোমরা পুরুষরা যা পরোনা আমরা মেয়েরা তা পারি। সেটা শুধু সমতলে নয় পিছিয়ে থাকা পাহাড়ি নারীটিও বেশ সাহসী। মা যেমন সন্তান কে পৃথিবী কি শেখায় তেমনি নারী আমাকে শেখালো কিভাবে নিজের হিসেব বুঝে নিতে হয়। কিভাবে প্রতিবাদ করতে হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার পাঠ গুটালাম সেই অনেক বছর আগেই। যখন ছাত্রদল রাজত্ব করতো তখন আমি প্রতিবাদ করতে শিখিনি। শুধু হুমায়ুন আজাদ স্যারের বিচার চেয়েছিলাম। তখনি বুঝেছিলাম এই জল্লাদের দেশ আমারনা। যখন ছাত্র লীগের ছেলেরা আমাকে এসে বলে চাপাতি দিয়ে আমাকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে তখনও আমি প্রতিবাদ করতে শিখিনি। যখন ছাত্রলীগের ছেলেরা আমাকে আমার প্রাণের জায়গা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই চারুকলা থেকে আমাকে বের করে দেয় তখনও আমি প্রতিবাদ করতে শিখিনি। আমাকে প্রতিবাদ শেখালো কবি সুফিয়া কামাল হলের সেই সাহসী নারীরা। কবি সুফিয়া কামাল নামটির কারনে কি তারা প্রতিবাদ কি জিনিস শিখে ফেলেছিল ? ইতিহাস কথা বলে। যা পুরুষরা পারেনি তা নারী করে দেখালো। কবি নজ্রুল বলেছিলেন- ‘পৃথিবীর যা কিছু কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’। কথাটার মানে বোধ হয় বুঝতাম না। মনের মধ্যে সবসময় খটকা লাগতো আমাদের ৭ বীরশ্রেষ্ঠ সবাই পুরুষ। নারীর কি খুব সাহসী অবদান ছিলনা !
আজকের সুফিয়া কামাল হলের মেয়েরা শুধু একজন হল সভাপতিকে জুতার মালা পরায় নি  তারা যেন সেই হাজার বছরের পুরুষ তান্ত্রিকতার ভয়াবহ নির্যাতনকে রুখে দিয়েছে। যারা যুগ যুগ ধরে এই বাংলাকে শোসিত করেছে, বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে বাংলার মানুষের সাথে। এই জুতার মালা মীর জাফরের গলায় শোভা পেল। এশা সেখানে একটি নাম মাত্র। এই জুতার মালা বস্তুত শাসকের গলায় শোভা পেল। যারা হাজার বছর বাঙ্গালির সাথে প্রবঞ্চনা করেছে। নারী তোমাকে সালাম। জাগো নারী জাগো, তোমরাই আমাদের এগিয়ে নেবে।
শামসুল হক এর মত বলতে ইচ্ছে হয়- ‘জাগো বাহে কোনটে সবাই’।
সকল নারী এবং পুরুষকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। কোটি কোটি বছর বেঁচে থাকুক এই বাংলা জনপথ, এই বাংলাদেশ।
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
১ বৈশাখ ১৪২৫
মানুষের অতীত না থাকলে ভবিষ্যত থাকেনা। তাই অতীত স্মৃতিচারণায় পুরনো গান শুনছি। যদি আর একবার সুযোগ পেতাম জীবনকে সংশোধন করে নিতাম
আমার যেদিন মৃত্যু হবে সেদিন কাকে কাকে দেখতে চাইবো ? সেদিনের দৃশ্যটি দেখতে ইচ্ছে করছে। কিংবা ছুটতে ছুটতে জীবনের গতির মাঝে যদি আমার মৃত্যু হয় ! চলন্ত ট্রেনে বাংলার অপরুপ দৃশ্য দেখতে দেখতে যদি আমার মৃত্যু হয় তবে কেমন হয় !
icche & govir icche dui mile sopno hoye dhora dei r tokhoni onuvuti tar ostitto janan dei r porokkhonei amra harate bosi nijeke na onnoke!!!!!!!! aaha ki bissoy ai bhubone!!
jibone jober dana khujte giye joto bipotti. ami,amra, amra sokole sei jober dana khuje phirchi protiniyoto.bishadgrosto din r kichu chokhe joma jol abirol toltol kore, icche kore dub dite . hariye jai shunno bohoman astitter songkote. jomte thake dhula pora jober danai aro kichu aboron. khuje phire mon aro somikoron.Valo theko bondhu valo theko
ছবি যেন কথা বলে,
প্রতিনিয়ত
দৃশ্যমান ছবি অথবা অদৃশ্যমান ছবি।
বুকের বামপাশটা চিনচিনে ব্যথা করে উঠে
ছবি কথা বলে
অথবা
অনেক কথা জাগ্রত করে,
যদি পোড়ানো যেত ছবি
তবে ছাইপাশগুলো কথা বলে উঠতো
উফৃ ছবি কথা বলে অথবা
খুব বেশি নীরব থাকে
আমার জমানো কথাগুলো আমাকেই গ্রাস করে
বেড়ে বেড়ে উঠে
শুধুই বেড়ে উঠে
ছবি কথা বলে
If you see life in long shot you can see something but if you see in close shot you can see different things.
Do you know which is true?
True is nothing.
nothingness is everywhere.
Life is like image. sometimes it moves sometimes not.
Life is like cinema,again Life is not like a cinema
মাঝেমাঝে মনে হয় সময় ফুরাতে চাইনা। সময় বারবার কেন ফিরে আসে! মুহুর্ত গুলি মনে হয় পুরনো, আগেও এসেছিল। কেউ কি এসেছিল?
বাতাসে তোমার গন্ধ পাই। কোথাও দেখতে পাইনা। আমি চারপাশে তাকিয়ে প্রিয় মুখ খুঁজি। সুহাসিনী শেষ কবে হাসি দেখেছি তোমার মনে আছে? কোনো এক পরিক্ষায় এক ছিলতে মিষ্টি হাসি। ভালো থেকো মিষ্টি বকুল প্রিয় শিউলি ফুল।
kichu bishadmoy somoy r apluto ondhokar kokhono akar kokhono ba nirakar amio khuji phirchi abar . tumio colcho amio hatchi
কবিতার পাতাগুলো এলোমেলো শব্দ লিখছে
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি,
এই শব্দ আমার ভীষন রকম অচেনা
ভালো থেকো কবিতারা
ভালো থেকো প্রিয় শিউলি ফুল।
কল্মিলতাগুলো পথে প্রতিনিয়ত দেখি।আমি মিছে ভ্রমে শিউলি ফুল দেখতে পাই। শিউলি ফুলেরগন্ধ অনুভব করি। ভালো থেকো কাঠ বিড়ালি,,
বিষন্ন একাকী ঘোর তমসায় আমি আলোহীন প্রান্তরে অপেক্ষায় থাকি, মুহূর্তেরা ধরা দেয় দু:স্বপ্নের গাঢ় অন্ধকারে আমি আলো খুঁজে বেড়ায়
বিষন্ন দিনের কবিতার মতো সকাল আসে, আলো এসে ছুঁয়ে দেয়না কপাল, আমি রোদের অপেক্ষায় থাকি। রোদ আমার সারাজীবন চাই।
ভাল লাগে তারপর/ ভাল লাগে/ অপলক চোখে তাকিয়ে থাকতে ভাল লাগে/ নিশীত রাতে চোখের কিনায় তাকিয়ে থাকতে ভাল লাগে/ ভাল লাগে মাঝ দরিয়ায় ডুব দিতে/ভাল লাগে তোমার হাসিতে মুক্তা ঝরায় যখন/ তাকিয়ে থাকতে/ভাল লাগে কাঠ গোলাপের মায়া তোমার কানের পাশে গুজে দিতে/ ভলে লাগে তোমার এলোচুলে বিলি কাটতে/ভাল লাগে তোমার চোখে কাজল দেওয়া দেখতে/ ভাল লাগে অনেক অনেক ভিড়ে তোমায় দেখতে/ ভাল লাগে নিশ্চুপ নিরালায় তোমার হাত ধরে হাঁটতে/ আমার ভাল লাগার মুহূর্তৃরা হারিয়ে যায় রুপকথার গল্পের মত তবুও ভাল লাগে.. তোমার হাসোজ্জ্বল মুখখানা দেখতে
মনে পড়ে মাঝ দরিয়ায় সাতরানোর চেষ্টায় অবিরত/ ঢেউয়ের দোলায় হতবাক হওয়া/ ডুবে ডুবে একমুঠো পানি খাওয়া্/ তবুও ভালো লাগে ভেসে থাকতে/ করজোড়ে অনুরোধ আমার হাতটি ধরো/ আমাকে টেনে তোলো/ আরো কিছুক্ষন ভেসে থাকি/ আরো কিছুক্ষন শ্বাস নিই/ আমি বেঁচে উঠি/ আমার বেঁচে থাকার স্বপ্নটাকে জিইয়ে রাখো/ জিইয়ে রাখো
সুতোটা কেটে গেছে শুধু রেশ রয়ে যায়...........
জীবন যেন ইমেজের খেলা। ইমেজ, ইমেজ, ইমেজ। বর্তমান বেড়ে বেড়ে ইমেজে রুপান্তরিত হয়। ইমেজ কাঁদায়, হাসায়, আবেগে আপ্লুত করে।
আবু বকরের মায়ের কান্না

আজ ৩রা ফেব্রুয়ারী। জানি বেশিরভাগ মানুষ ভুলে গেছেন। কয়দিন পরেই ৮ই ফালগুন। মনে পড়ে ৫২, মনে পড়ে ৭১, মনে পড়ে ৭১ পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি। আমিও সেখানে ছিলাম ২০০৩-২০১২। আমি দেখিনি ভারত, দেখিনি ব্রিটিশ, দেখিনি পাকিস্তান, দেখেছি বাংলাদেশ। দেখেছি বাংলাদেশের দুইটি বড় রাজনৈতিক দলের শোষণ। প্রাণের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণের চারুকলা, প্রিয় স্যার এ. এফ রহমান হল। জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করলাম এই ক্যাম্পাসে। আজ আমি লজ্জিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পেরে, নিজেকে কখনোই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পেরে গর্বিত মনে হয়না। নোংরা ছাত্র রাজনীতি, নোংরা শিক্ষক রাজনীতি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ময়লার ভাগারে পরিণত করেছে। এই জাতি বড়ই দুর্ভাগা চোখের সামনেই প্রাচ্যের অক্সফোর্ড ডাস্টবিনে রুপান্তর হয়েছে। জানি সামনেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বাংলাদেশকে নের্তৃত্ব দিবে। কিন্তু আমি শংকিত এই বোধহীন মানুষের মত দেখতে প্রাণীগুলো যখন বাংলাদেশকে নের্তৃত্ব দিবে তখন জাতি কোনদিকে পরিচালিত হবে!
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
০৩.০২.২০১৮
Cinema is not only for entertainment. Its reflection of life. Its more than life...
পাতা ঝরার গান ফুরায়না... বসন্ত দূর অতীতে। গতকাল আর ফিরে আসবেনা। আগামীকাল জ্যামে আটকে আছে। ভালো থেকো বসন্তের কোকিল
Sometimes lyrics is not important for life. We can feel rythm of life and create lyrics in our own way.
জীবন যেন কি! কিছু শব্দ নাকি কিছু বাক্য, নাকি কিছু সুর, কিছুই যেন ধরা দেয় না। জীবন তোমাকে খুঁজে ফিরি....
বাংলাদেশে এখনো অনেক মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বসবাস করে। এখনো মানুষ ফুটপাতে থাকে, রেল স্টেশনে থাকে, ওভার ব্রীজে থাকে, রাস্তায় থাকে, খোলা মাঠে থাকে, যেখানে একটু শরীর এলিয়ে দিয়ে যায়, সেখানে থাকে। রোদ-বৃ্ষ্টিতে মাথা গোজার ঠাঁই নাই। এখনো মানুষ ডাস্টবিন থেকে খাবার কুড়িয়ে খায়। এখনো অনেক মানুষ না খেয়ে রাত্রিযাপন করে কোনো রকম নিরাপত্তার কথা না ভেবেই। এখনো বিচার ব্যবস্থা চরম নাজুক। তবুও আমরা মনে করি আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে গেছি। হয়তো খুব দ্রুত উন্নত দেশের স্বীকৃতি পাবো। কিন্তু আসলে কি আমরা উন্নত হচ্ছি ? যতদিন দেশের সব মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ না হচ্ছে ততদিন এই উন্নয়নের কোনো মূল্য আছে ? হ্যা এটা ঠিক দেশের জিডিপি এগিয়েছে, দেশের রিজার্ভ বেড়েছে কিন্তু এই উন্নয়নের সুবিধা কারা ভোগ করছে ? শুধু উপরতলার মানুষ। দেশের শুধু অভিজাত শ্রেণীর উন্নয়ন মানে কি সারা বাংলাদেশের উন্নয়ন? আমরা কি এই জন্য স্বাধীনতা চেয়েছিলাম ? আমরা প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস উদযাপন করি। কিন্ত আমরা কি মনে রেখেছি আমরা কেন স্বাধীনতা চেয়েছি ?
পৃথিবীতে মধুরতম শব্দগুলোর একটি নাম “বিপ্লব আসন্ন”। বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক হায়- বিপ্লব
কিছু দ্বার উন্মুক্ত হয়, কিছু বন্ধ হয়। বন্ধ আর খোলা এই প্রক্রিয়া যেন চলতেই থাকে। জীবন অনুভবে বন্ধ দ্বার আর খোলা দ্বার কড়া নাড়ে। বন্ধ আর খোলা দ্বারের মাঝখানের সময়ের নাম বুঝি জীবন.
বিষন্ন দিনের সবুজ পাত্ররা দূরে হারিয়ে যেতে থাকে, আমি হাত বাঁড়িয়ে ছুঁতে চাই। দূরে মিলিয়ে যেতে থাকে সবুজ পল্লব। দু:স্বপ্নের গাঢ় অন্ধকার নেমে আসে আকাশ থেকে। আমি মুহুর্তেই হারিয়ে যাই ব্ল্যাক হোলের অসীম সীমানায়। স্মৃতিরা আঁকড়ে ধরে মস্তিষ্কের ছোট্র নিউরনে।
বিষন্ন আকাশে রঙীন ধুলা জমা হয়। আমি হাত দিয়ে আলতো করে ধুলা সরায়। বাতাসে ছড়িয়ে যেতে থাকে রঙীন ধুলা। রঙীন ধুলাগুলো বিষাক্ত ঠিক যেন স্কারলেট লেক কিংবা বিষাক্ত প্রুশিয়ান ব্লু। আমি আনমনে তাকিয়ে থাকি অার ধুলাময় নি:শ্বাস নিই।
সময়টা খুব সম্ভবত ২০০৪ সাল কিংবা ২০০৫ সাল। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্র। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জুরে ছাত্রদলের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। তখন বৈশাখ এর আয়োজন চলছে। আমাদের সুশীল সমাজ কোনো কর্পোরেট কোম্পানির বিজ্ঞাপন নিতে রাজি নয়। কারন এতে চারুকলা তথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজন ছোট হয়ে যায়। পুরো ক্রেডিট কর্পোরেট কোম্পানি নিয়ে নিবে। এবং গ্রাস করবে আমাদের সংস্কৃতিকে। যেমনটি আমরা দেখেছি চট্টগ্রামের বৈশাখী মেলা তথা জব্বারের বলি খেলা এর বেলায়। বাংলা লিংক গ্রাস করেছিল শত বছরের এতিহ্যকে।
যুগান্তর, গ্রামীন ফোন, বাংলালিংক চেষ্টা করছিল চারুকলা জুরে তাদের ব্র্যান্ডিং করতে। কিন্তু ছাত্র শিক্ষক কেউ রাজি নয়। দু একজন ছাত্রদলের কর্মী ছাড়া। কারন তারা ৫ লাখ টাকা বিজ্ঞাপন পেলে এর বড় একটি অংশ তাদের পেটে যেত। তা নিয়ে বেশ গোলমাল লেগে গেল। টাকার ভাগ তারা ছাড়তে রাজি নয়। এখন প্রশ্ন হলো বিজ্ঞাপন না নিলে কি হয় ? বৈশাখের র‌্যালি কিভারে হবে ? এত টাকা আসবে কোথা থেকে ? তবুও ছাত্ররা চ্যালেন্জ নিল। নিজেরা তাদের জল রং, সরা, মুখোশ তৈরি করে তা বিক্রি করে টাকা যোগারের চিন্তা করলো। কিছু লোভী ছাত্রদল কর্মী এবং কর্পোরেট কোম্পানি ছাত্রদের সাহসিকতায় পরাজিত হলো। শুরু হলো নিজেরাই নিজেদের অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা। এই প্রচেষ্টা দেশকে অনুপ্রানিত করে এই বিশ্বাস পোষন করি। আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের নিজেদের অর্থসংস্থান করতে হবে। যতই কর্পোরেট জগত থেকে চাপ আসুকনা কেন।
এবার আসি মূল প্রসংগে- আমরা কি সেদিন এই মূল্যবোধ নিয়ে কর্পোরেট কিংবা ছাত্রদলকে রুখে দিয়েছিলাম যে অন্য কেউ যেন সহজে সেই জায়গা দখল করতে পারে। মোঘল, ব্রিটিশ, পাকিস্তান এভাবেই আমাদের ধোকা দিয়েছিল। আর আমরা বারবার প্রতারিত হয়েছিলাম।
এখন তবে কারা শোষন করছে ! ক্ষমতার পরিবর্তন হয় কিন্তু শোষনের অবসান হয়না !
চারুকলা অনুষদে এখন স্থায়ীভাবে স্থান পায় ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের ব্র্যান্ডিং। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও তারা তাদের হিংস্র থাবা থেকে রেহাই দিলনা।
যেখানে একদিনের জন্যও আমারা কর্পোরেটদের ব্যান্ডিং করতে দেয়নি, সেখানে কিভাবে স্থায়ীভাবে তারা ব্যান্ডিং করার সুযোগ পায় ! হুমায়ন আজাদ স্যারের কথায় বলতে চায়- “আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম”
চারুকলার ডিন স্যারের কাছে জানতে চায়- কত কোটি টাকার বিনিময়ে তারা স্থায়ীভাবে ব্যান্ডিং করার সুযোগ পেল ?
শিল্পীরা কি শুধু চাটুকার হবে ? একটু সচেতন হবেনা ! তবে কিসের বোধ !!!

কোটা একটা ফাঁদ

ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
৪.১১.২০১৮
আমরা সবাই ক্রিকেটকে ভালবাসি। ক্রিকেট আমাদের অহংকার। ক্রিকেট আমাদের অলংকার। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ নানান সমস্যায় জর্জরিত- ক্ষুধা, দারিদ্রতা, অশিক্ষা, ধর্মীয় কুসংস্কার, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, খুন, ধর্ষন, অপরাধ প্রবণতা, সামাজিক বৈষম্য ইত্যাদি। এর মধ্যেও কিছু আশানিয়া বিষয় আছে যেমন- আমাদের গার্মেন্টস শিল্প, ঔষধ শিল্প, ক্রিকেট, খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা, কিছু বৈজ্ঞানিক সাফল্য, নোবেল প্রাপ্তি, কিছু ব্যাক্তিগত সাফল্য, নারীদের এগিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। আমাদের রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের পাহাড়সম দুর্নীতি সত্ত্বেও দেশ এগিয়েছে। এর অনেক কারন রয়েছে। এর মধ্যে আমাদের শ্রমশক্তি আমাদের অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমরা যদি আমাদের শ্রম শক্তিকে সম্পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারি তবে পৃথিবীর বুকে আমরা অন্যতম সুখী সমৃদ্ধ দেশ হতে পারি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মানুষ ক্রিকেটে যখন বাংলাদেশ জিতে তখন অানন্দে লাফিয়ে উঠে। সব দু:খ কষ্ট ভুলে যায়। বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে চিৎকার করে উঠে। সারা বিশ্ব এখন আমাদের চিনে, কারন ত্রিকেটে আমরা এখন শক্তিশালী। পৃথিবীর যে কোন দলকে হারানোর ক্ষমতা আমরা রাখি। আমার বিশ্বাস খুব বেশি দিন নেই আমরা ত্রিকেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবো। স্টেডিয়াম জুড়ে বাংলাদেশের পতাকা উড়বে। আমার সোনার ছেলেরা বিশ্বকাপ হাতে আনন্দে উদ্বেলিত হবে। আমাদের দর্শকরা আনন্দ মিছিল করবে। এবং আমদের অনেকেই তখন কাঁদবে, এই কান্না কষ্টের নয় অনেক খুশির। আমি এই কান্নায় সামিল হতে চাই। এখন সেই ক্রিকেট দলকে যদি আমরা ৫৬ % কোটার মধ্যে নিয়ে আসি তবে কেমন হবে? মুত্তিযোদ্ধা কোটা ৩০% মানে ৩.৩জন, প্রতিবন্ধী কোটা ১% মানে ০.১১ জন, আদিবাসি কোটা ৫ % মানে ০.৫৫ জন, নারী ও অন্যান্য কোটা ২০% মানে ২.২ জন। তখন আমরা কি পারবো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে ? আমাদের ভাবার সময় এসে গেছে আমরা কি দেশকে এগিয়ে নিব নাকি পিছিয়ে দিব? কোটা একটা ফাঁদ। এটা বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে আমরা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধারা কি সত্যিই এই সুবিধা পাচ্ছে নাকি তাদের নামে অন্যরা এই সুবিধা ভোগ করছে। মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন, নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সেটা কি কোটার জন্য ! বাংলাদেশের অনেক মানুষ যুদ্ধ করেছেন যাঁরা যুদ্ধ কি জিনিস জানতোনা। অস্ত্র চালাতে জানতোনা। শুধুমাত্র দেশকে ভালোবাসার জন্য, দেশের মুক্তির জন্য তাঁরা নিজের জীবন বাজি রেখেছেন। যিনি দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করতে পারেন উনি দেশ গঠনের জন্য তাঁর সন্তানকে প্রস্তুত করতে পারেন। তাঁর পরিবারকে প্রস্তুত করতে পারেন। তাঁর কোটার প্রয়োজন হবেনা। অন্তত আমি তাই বিশ্বাস করি। তাই কোটা নয় মেধাবীদের মূল্যায়ন করুন। এই মেধাবীরাই সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। আসুন কোটার ফাঁদ হতে দেশকে মুক্ত করি। কোটা নিয়ে আর দুর্নীতি নয়। কোটা নামের জুজুর কারনে মাস্টার্স পাশ মেধাবী ছাত্রের জন্য এস এস সি ফেল নেতার সুপারিশ লাগে। বাংলাদেশে একজন পিয়নের জন্য এখন এস এস সি পাশ নিয়োগ সার্কুলার দেওয়া হয়। আমার দেখা একজন মাস্টার্স পাশ ব্যাক্তি পিয়নের চাকরী করেছেন কারন সরকারী চাকরী করতে চান। কারন ৩০ বছর পর সরকারী চাকরী পাওয়া যায়না। পরবর্তীতে তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের উন্নতি ঘটিয়েছেন বর্তমানে শিক্ষা বিভাগে কর্মরত। অন্তত এইটুকু বুঝতে পারলাম উনি মেধাবী। মেধাবী না হলে তিনি পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের উন্নতি ঘটাতে পারতেননা। অথচ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ পদে একজন ৮ম শ্রেণী পাশ নিয়োগ পায়। কারন কোটা। বাবা কোটা, স্বামী কোটা, নাতি কোটা, ভাই কোটা, বোন কোটা, নেতা কোটা, নেতার পতি কোটা, মামা কোটা, চাচা কোটা, পারাতো কোটা, সন্ত্রাসী কোটা, জেলা কোটা, এলাকা কোটা ইত্যাদি কোটায় জাতি জর্জরিত। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। প্রতিটি মানুষ মেধা বিকাশের সুযোগ পাক।
একটা প্রশ্ন ঘুরছে মাথায় ১৯৭২ থেকে কোটা প্রথা চালু আছে তাহলে সিরাজ সিকদারকে কার নির্দেশে যেন ১৯৭৩ সালের জানুয়ারী মাসে রাষ্ট্রীয় বাহিনী বিনা বিচারে হত্যা করেছিল ? তিনিতো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাঁর কোটা তখন কোথায় ছিল? স্বাধীন দেশে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে মরতে হল কেন? সেই থেকে আমাদের বিচার বহির্ভূত হত্যা শুরু। যার পরবর্তী রূপ হলো র‍্যাব।
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খন্দকার মোশতাক তারপর খালেদ মোশারফ তারপর সিপাহী বিপ্লব। তারপর কার নির্দেশে যেন মিথ্যে আইনে বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরের ফাঁসি হয়েছিল। কেন? তখন কোটা কোথায় ছিল? তাঁর সন্তানেরা এখন কোটার সুবিধা কি পাচ্ছে ! এই হত্যাগুলোর বিচার হল না কেন? বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধার মুল রুপকার তাজ উদ্দিন আহমেদ এর হত্যার বিচার হল কি? তাঁকে
তো ইতিহাস ভুলতে বসেছে। কেন? তাঁর সন্তানেরা কোটার সুবিধা পাচ্ছে কি? স্বাধীন দেশে তিনি প্রায় নিগ্রিহ ছিলেন। কেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু বকরকে জানি কারা মেরেছিল ? এহসানকে জানি কারা মেরেছিল ? বিশ্বজিৎকে
জানি কারা মেরেছিল ? আর কত নির্লজ্জ হলে অমানুষ চেনা যায় !!!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঁধনকে জানি কারা প্রকাশ্য রাস্তায় শ্লীলতাহানি করেছিল ? জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কে জানি ধর্ষণের সেঞ্চুরি করেছিল ? আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এই পরিচয় দিলে যদি আমাকে আবু বকরের মা বলে - আমার ছেলেকে তোমরা কেন খুন করলে ? আমার ছেলের অপরাধ কি ছিল ?
আমি কি জবাব দিব ?
আমাকে যদি এহসানের মা বলে আমার ছেলেকে কেন তোমরা এভাবে পিঠালে ? আমার ছেলের চোখ কেন নষ্ট করলে ?
আমি কি জবাব দিব ?
বিশ্বজিৎ এর মা, ধর্ষিতার মা, আরো অনান্য মায়ের প্রশ্নের কি উত্তর দিব ? নাকি আমাকে সারা জীবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় গোপন করে বাঁচতে হবে ?