বৃহস্পতিবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৫

শিরোনামহীন

ছোট ছোট নক্ষত্রের মাঝে তারারা ধপ করে নিভে যায়। আলো এসে আলো ফিরে যায়। সেকেন্ডের ভগ্নাংশে সবকিছু দূরে মিলিয়ে যায়। আমি কূলের দিকে অবাক চোখে তাকিযে থাকি। মরিচিকা আমাকে বারবার প্রলুব্ধ করে। আমি কাঁদি, আবারো কাঁদি। এ কান্নার কোন শব্দ নেই। আছে নি:শব্দ নিস্তব্ধতা। আছে নি:শব্দ আর্ত চিৎকার। আছে সংখ্যাগণণা ১..২..৩..।
কেবলই মিছে স্বপ্ন। আরও একটি নক্ষত্রের মুত্যু। হয়ত মুত্যু নয় অন্য কোথাও তার পদচারণা। তবে একসাথে পথচলা নয়।
সাময়িক পথচলা কিছুটা শক্তি দেয়। কিন্তু পথকে নির্দেশ করে প্রবল শক্তির দিকে ধাবিত করার আগেই ধুমকেতু হয়ে প্রবল আঘাতে সবকিছু নিশ্চিহৃ হয়ে যায়।
ভালো হোক পৃথিবীর পথচলা।
শিল্পের, আমাদের।
আমরা ভালো ভাবে বেঁচে উঠি, নতুন স্বপ্ন দেখি আর স্পর্শ করি প্রতিদিন নতুন গন্ধ এই শভকামনা রইলো।

সোমবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৫

ডায়রির পাতা 2004

ডায়রির পাতা
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
২০০৪
আমি পথ চলতে চলতে কখনো বুঝতে পারিনি আমি কিভাবে চলছি। অথচ আমি চলেছি উল্টো হয়ে উল্টো পথে। পথ চলতে চলতে যখন অনেকখানি সময় পেরিয়ে এলাম তখন বুঝলাম হায়! আমি একি করলাম এতটা পথ উল্টো হয়ে উল্টো পথে চললাম। আমি উল্টো হয়ে চলার কারনে বুঝতে পারিনি আমার পথ এইটি নয়। আমারতো এখন ফেরার পথ নেই। আমি পারছিনা ঠিক বিন্দুতে গিয়ে ফিরে যেতে যেখান হতে শুরু করেছিলাম সেখান হতে নতুন একটি পথের সন্ধানে। ঈশ্বরের কাছে আমার চিরন্তন ক্ষোভ রয়ে গেল ঈশ্বর কেন আমায় দিকভ্রান্ত করে দিলেন। আমায় কেন তিনি সোজা, সুন্দর পথটি দেখালেননা। আমি চলেছি আমার মত উল্টো হয়ে উল্টো পথে। আমার ঠিক এখানে আসার কথা ছিলনা। কোনো প্রয়োজন বোধ হয় ছিলনা। কিভাবে যেন ভুল করে ভুল পথে চলে এলাম। ঈশ্বর এখানে আগেই একজনকে পাঠিয়েছেন তবে আমায় কেন পাঠালেন। শূণ্যতা যেখানে পূরণ হল সেখানে নতুন করে আমায় কেন পাঠানো হল। নতুন  পানি যেমন পূর্ণ পাত্রে দেওয়া হয় পানিগুলো উপচে পড়ে আমিও ঠিক তেমনি উপচে পড়লাম। মাটির সাথে মিশে যেতে থাকলাম। কিন্তু আমিতো কখনো এমনটি চায়নি। পূর্ণতায় যারা তারা উড়ছে আকাশে! আনন্দে! উদ্বেলিত আর বাকিরা ? তারা নিচে মাটির সাথে লুটোপুটি করছে। তারা জানেনা কেন তারা ? কি হবে ? কোথায় যাবো ? দিকভ্রান্তের মত কিছু অসংলগ্ন প্রশ্ন আমাকে বিদ্ধ করে । আমার কষ্টমাখা হৃদয়ে চাপা ক্রন্দন কেঁপে উঠে।
ঈশ্বর উপর থেকে সব দেখছে আর জয়-পরাজয়ের উর্দ্ধে কুটিল হাসি হাসছে। কেন তিনি এমন করে মজা পান। প্রশ্নটি হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলাম... মহাকাশের শূণ্যতার মাঝে লুকিয়ে থাকা এক অসীম শক্তিকে উদ্দেশ্য করে।

রবিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৫

আমি দেখেছি তোমায়

আমি দেখেছি তোমায়
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম

আমি দেখেছি তোমায় স্বপ্নে, বাস্তবতায়
আমি দেখেছি তোমায় আলো আঁধারে নীরবতায়
আমি দেখেছি তোমায় কালে ভদ্রে অচেনা জায়গায়
আমি দেখেছি তোমায় অনুভবে শিহরনে মাঝ দরিয়ায়
আমি দেখেছি তোমায় আকাশের নীল সীমানায়
আমি দেখেছি তোমায় আয়নায় লক্ষ্যভেদ করে ছুটে চলেছো অজানা মায়ায়।
আমি দেখেছি তোমায় দূর পাহাড়ের চূড়ায়
আমি দেখেছি তোমায় আকাশে মেঘের লুকোচুরি খেলায়
আমি দেখেছি তোমায় নদীর স্বচ্ছ জলে, সরোবরে নতুন সূর্যোদয়।
আমি দেখেছি তোমায় শিশির দুবঘাসে সজীবতায়
আমি দেখেছি তোমায় হলুদ আলোয় স্বপ্নময় আভায়
আমি দেখেছি তোমায় গোধুলির শেষ আলোয় ডানা মেলে উড়ছো হাওয়ায়।
আমি দেখেছি তোমায় রাত্রির নি:স্তব্ধতায় চাঁদের পূর্ণিমায়
আমি দেখেছি তোমায় ভোরের  বাতাসে শিহরন দোলায়
আমি দেখেছি তোমায় সকালের সূর্যালোকে লুকোচুরি খেলায়
আমি দেখেছি তোমায় কর্মব্যস্ততায়, হঠাৎ চমকানো আলোয়
আমি দেখেছি তোমায় ইটের দেয়ালে কংক্রীটের বাঁধনে
আমি দেখেছি তোমায় গাছের ছায়ায়, বাঁশি বাজছে বাজছে সানাই।
আমি দেখেছি তোমায় হলুদ ফুল মিষ্টি ভুল, হাওয়ায় বুলবুল
আমি দেখেছি তোমায় সমুদ্রের ঢেউয়ে ভাসছো, ভাসছো আর ভাসছো
আমি দেখেছি তোমায় তপ্ত রোদে আলোকছটায়
আমি দেখেছি তোমায় লাল নীল স্বপ্নে বিমূর্ত ভালবাসায়।

মঙ্গলবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৫

ঈশ্বরের আলো

ঈশ্বরের আলো
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
২৫/১২/২০০৭

আজ বড়দিন
খৃষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন
ঝিনুক বাতির আলোকছটায় রাঙানো গীর্জার চারপাশ
রোদ এসে ঠিকরে পড়ছে
বাতাসে দোল খেয়ে ঝিনুক বাতিগুলো চিকচিক করে উঠে।
স্বয়ং ঈশ্বর যেন আজ নেমে আসবেন মর্ত্যে
ঐ গীর্জার চূড়া দিয়ে তিনি নামবেন
এক অপার্থিব আলোয় আলোকিত হবে চারপাশ।
আলোর ধর্ম মতে তার প্রথম কাজ আলোকিত করা
আর অন্ধকারকে দূরীভিত করা
ঈশ্বর নেমেই পৃথিবীকে শুধু আলোকিত করবেননা
রাঙিয়ে তুলবেন সবকিছু শান্তির পরশে
পবিত্রতায় ভরে উঠবে আজকের পৃথিবী।
পামগাছগুলো যেন ঝিনুক বাতির আনন্দে আনন্দিত
তার লতাগুল্মগুলো নেমে আসছে নীচের দিকে
যেন অন্যরকম এক ঝিনুক বাতি।
ঘুলঘুলির ছোট্ট আলোয়
দেয়ালটায় বৈচিত্র্য আনছে
মনে হয় যেন সুন্দর টেক্সচার,
সবকিছু সুন্দরে রুপান্তরিত হোক।

ছেলেবেলা

ছেলেবেলা
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
২৪/১২/২০০৭


প্লাটফরমের ওপাশটায় হেঁটে চলেছি
বহুদিন হাঁটা হয়না এ পাশে
সেই যখন স্কুলে পড়ি
কতদিন হেঁটে বাসায় ফিরতাম
প্লাটফরমে এসে বাতাসের গন্ধ নিতাম,
কখনোবা বাসে ফিরতাম
ওভারব্রীজের উপর দাঁড়িয়ে
দূরপানে চেয়ে থাকতাম
হেঁটে যখন ফিরতাম তখন তৃপ্তির মায়ায় জড়িয়ে পড়তাম
দু এক টাকা, পাঁচ টাকা ইত্যাদি করে জমিয়ে রাখতাম
তৃপ্তিকে পাওয়ার জন্য
এখন তৃপ্তি নেই তার জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে নতুন কেউ
কিন্তু সেই তৃপ্তিটুকু কি আর আছে
আমার ছেলেবেলার তৃপ্তি
এখনো খুঁজে ফিরি।

সোমবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৫

টিকেটের জন্য অপেক্ষা

টিকেটের জন্য অপেক্ষা
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
২৪/ ১২/ ২০০৭
টিকেটের জন্য অপেক্ষায় বসে আছি
কখন আসবে টিকেট
সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা পেরিয়ে গেল
তবু টিকেট আসছেনা
আমি ঠিক ডুবে যেতে বসেছি কবিতার মাঝে
অনেকক্ষণ অপেক্ষা,
কিছু কবিতার এলোমেলো রেখা
হঠাৎ মাঝবয়সী একজন এসে বললেন
ঠিক বললেননা যেন বুঝতে পেরেছিলেন
আমিই টিকেটের জন্য অপেক্ষায় বসে আছি
হাত বাড়িয়ে দিলেন
টিকেট হাতে পেয়ে দেখলাম এখনো অনেক সময় বাকী
ঠিক গুছিয়ে নেবার।
এমনি করে যদি পৃথিবী হতে গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার টিকেট পেতাম
কেউ এসে আমায় বলতো এই নাও
স্রষ্টার কাছে যাওয়ার টিকেট
তোমার হাতে অনেক সময়
গুছিয়ে তৈরী হয়ে নাও।
আমি আমার হাতের সবখানি কাজ গুছিয়ে নিতাম
সকলের কাছে হাসিমুখে বিদায় নিয়ে বলতাম-
তোমরা সকলেই ভালো থেকো।

স্বপ্নডানা

স্বপ্নডানা
ফরহাদ উদ্দিন মাসুম
২৪/১২/২০০৭

কবিতারা সব ঘুরে বেড়ায়
আকাশের প্রান্তে
হাত বাড়িয়ে ছুঁতে চায়।
মন বলে  মিস্টি রোদ,
শিশির কণা হারায়,
আমি বলি ভালবাসা
বেচেঁ উঠি তার ছায়ায়
তবুও-
কিছুতে কিছু হয়না
ভালবাসাও পূর্ণতা পায়না
দূর থেকে তাকিয়ে দেখি
কালো কাক, রোদের মায়ায়
সাদা আলোর ঝিলিক দিয়ে যায়।
আমি সুন্দর রোদ উপভোগ করি
বাতাসে মৃদু দোল দিয়ে যায়,
পাখিরাও ডানা ঝাপটিয়ে হেসে বেড়াই
আমি শুধু-
ডানা হোক স্বপ্ন
ভেসে বেড়াই।